Identifying one/two pupils with special needs in the primary schools and preparing a profile on these pupils.
Introduction:- বৈচিত্র্যময় এই পৃথিবীতে সৃষ্টির প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্বাতন্ত্র্যতা পরিলক্ষিত হয়। বিশ্বে বসবাসকারী সকল প্রাণীই আপন আপন বৈচিত্র্যে বিরাজমান। একই প্রজাতির মানুষের মধ্যেও রয়েছে কতই না বৈচিত্র্য। মানুষের স্বভাবে, তার মননে এবং মানসিকতায় বৈচিত্র্য চোখে পড়ে। আবার কখনো বৈচিত্র্য দেখা যায় তার শারীরিক অথবা মানসিক গঠনে কিংবা আভ্যন্তরীণ সংগঠনে। মানব সমাজের এক বিশেষ অংশ জুড়ে রয়েছে অস্বাভাবিক বিকলাঙ্গ, প্রতিবন্ধী এবং উচ্চ বুদ্ধিদীপ্ত শিশু যাদের এক কথায় বলা হয় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু (Children With Special Needs)।
Conceptual Literature:- সমাজের অগ্রগতি ও পূর্ণতা নির্ভর করে সমাজে বসবাসকারী সকলের সার্বিক কল্যাণ এবং উন্নতির উপর। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের দেশের শিশুরা কখনও দারিদ্র্যতার কারণে অবহেলিত অথবা কখনও জন্ম পূর্ববর্তী মায়ের অসুস্থতার কারণে বা জন্ম পরবর্তী সময়ে কোন কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীতে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু রূপে জন্মগ্রহণ করে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু ব্যাপক অর্থে একটি নির্দেশক শব্দ। বুদ্ধির দিক থেকে মেধাবী এবং গুরুতরভাবে প্রতিবন্ধী উভয়কেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বলা যায়। এই দুই ধরনের শিশুর ক্ষেত্রে বিশেষ শিক্ষাব্যবস্থার প্রয়োজন হয়।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বলতে সেই ধরনের শিশুদের বোঝায় যারা কোন না দিক থেকে স্বাভাবিক শিশুদের থেকে পৃথক। সাধারণত এই শিশুরা গড় মানের থেকে অনেক উচ্চমানের বা নিম্নমানের হয়ে থাকে। শিক্ষাক্ষেত্রে এই ধরনের শিশুদের দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখা আবশ্যক। তবে শুধুমাত্র প্রতিবন্ধকতা থাকলেই হবে না সেই প্রতিবন্ধকতার মাত্রা যদি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যা শিশুর স্বাভাবিক শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে তবেই তাকে শিক্ষাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বলা হয়ে থাকে।
মনস্তত্ত্ববিদ Michele Borba যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কথাটি ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর মতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বলতে সেই সমস্ত শিশুকেই বোঝায় যারা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন আর এই ভিন্নতার কারণেই তাদের জন্য বিদ্যালয়ে বিশেষ শ্রেণীকক্ষের ব্যবস্থা করতে হয়। যে সকল শিশুর ইন্দ্রিয়ক্ষমতা অর্থাৎ বৌদ্ধিক বা শারীরিক সক্ষমতা এতটাই ভিন্ন যে কারণে তাদের জন্য বিশেষ শিক্ষা বা বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন হয় সেইসব শিশুকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বলে। সমবয়স্কদের তুলনায় এই ধরনের শিশুদের বুদ্ধির সংবেদন, শারীরিক বৈশিষ্ট্য, ভাব বিনিময় ক্ষমতা ও সামাজিক দক্ষতা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কম বা বেশি হয়। অর্থাৎ, যারা সাধারনের বাইরে তাদেরকেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বলা হয়। বুদ্ধাঙ্কের দিক থেকে বলা যায় যে তাদের বুদ্ধাঙ্ক ৭৫ এর নীচে এবং ১২০ এর উপরে তারাই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু।
Objectives:- এই প্রায়োগিক কার্যটির উদ্দেশ্যগুলি নিম্নরূপ-
(১) বৌদ্ধিক বিকাশ ছাড়াও যার মধ্যে সুপ্ত সম্ভাবনা রয়েছে তার প্রতিভার বিকাশ ঘটানো।
(২) বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের যতটা সম্ভব আত্মনির্ভর করে তোলা।
(৩) বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের নিজস্ব দায়িত্ব ছাড়াও সামাজিক, পারিবারিক ও অন্যান্য দায়িত্ব গ্রহণের নিমিত্ত উপযুক্ত করে তোলা।
(৪) এই ধরনের শিশুদের শিক্ষা প্রদানের অন্যতম উদ্দেশ্য হল স্বাভাবিক শিশুদের সঙ্গে এদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা যাতে তারা কোন ক্ষেত্রেই পিছিয়ে না পরে।
(৫) সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং অভিভাবকদের সুপরামর্শ প্রদান করা যাতে এই ধরনের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা দেশের নাগরিক হিসেবে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতে সক্ষম হয়।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু চিহ্নিতকরণ:
নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলির উপর ভিত্তি করে এই ধরনের শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করা হয়ে থাকে-
বুদ্ধি- সাধারণ শিশুদের তুলনায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের বুদ্ধিমত্তা গড় মানের চেয়ে কম বা বেশি হয়।
শিক্ষামূলক পারদর্শিতার অভীক্ষা- এই ধরনের অভীক্ষার সাহায্যে শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন কর্মক্ষমতা পরিমাপ করা যায়। পারদর্শিতার অভীক্ষার ফলাফল থেকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সনাক্ত করা যায়।
কেস স্টাডি- এই পদ্ধতির মাধ্যমে কোন বিশেষ সমস্যাযুক্ত শিক্ষার্থীর সামাজিক পরিবেশে জীবনযাপন করার সমস্যার কারণগুলি খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়।
সমাজমিতি- এই পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীর শ্রেণীকক্ষে সহপাঠীদের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক, সামাজিক মিথস্ক্রিয়া এবং সাবলীলভাবে মেলামেশার দিকগুলিকে চিহ্নিত করা যায়।
মনস্তাত্ত্বিক অভীক্ষা- বুদ্ধির এই অভীক্ষার সাহায্যে প্রজ্ঞাজনিত সমস্যামূলক শিক্ষার্থীদের সনাক্ত করা যায়।
পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি- শিক্ষক ও অভিভাবকগণ এই পদ্ধতির সাহায্যে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের চিহ্নিত করতে পারেন।
মূল্যায়ন- মূল্যায়নের মাধ্যমেও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের অনেকক্ষেত্রে সনাক্ত করা যায়।
সামাজিক দক্ষতা- সামাজিক দক্ষতায় অক্ষম বা পার্থক্য থাকলেও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের চিহ্নিত করা যায়।
Guidelines for the activity:- উক্ত প্রায়োগিক কার্যটি সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে শিক্ষক মহাশয় প্রথমে আমাদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর ধারণাটি স্পষ্ট করলেন। তারপর আমাদের প্রত্যেককে নিকটবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে একজন/দুজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুকে সনাক্ত করতে বললেন। তারপর সেই শিশুটির পরিচয় গ্রহণ করে তার পিতামাতার কাছ থেকে একটি নমুনাপত্রের মাধ্যমে শিশুটির সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার পর সেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুটিকে সাধারণ শিশুর মত স্বাভাবিক জীবনযাপন ও পড়াশুনায় সাহায্য করতে তার পিতামাতা/শিক্ষককে সচেতনতা অবলম্বন ও সুপরামর্শ দান করতে নির্দেশ দিলেন।
Execution:- এই প্রায়োগিক কার্যটি সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে প্রথমে আমি পূর্ব বর্ধমান জেলার অন্তর্গত দেয়াসীন অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছলাম। সেখানে গিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট অনুমতি নিয়ে তৃতীয় শ্রেণীর একটি ছাত্রীকে পর্যবেক্ষণ করলাম এবং সেই ছাত্রীটির সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে আমি তার একটি প্রোফাইল প্রস্তুত করলাম।
শিক্ষার্থীর পরিচয়
শিক্ষার্থীর নাম - পূজা দাস
শ্রেণী- তৃতীয়
রোল নং - ২১
বয়স- ৮ বছর
উচ্চতা- ৩'৫"
বুদ্ধাঙ্ক- ৮০
শারীরিক অক্ষমতা- শ্রবণ প্রতিবন্ধী
নমুনা পত্র
|
পারিবারিক ক্ষেত্র |
হ্যাঁ |
না |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
জন্ম পূর্বকালীন ও জন্মকালীন ক্ষেত্র |
হ্যাঁ |
না |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
সামাজিক ক্ষেত্র |
হ্যাঁ |
না |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিক্ষাগত ক্ষেত্র |
হ্যাঁ |
না |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
অন্যান্য ক্ষেত্র |
হ্যাঁ |
না |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
বিভিন্ন ক্ষেত্রের শতকরা হিসাব
|
|
|
|
|
|
|
পারিবারিক ক্ষেত্র |
|
|
|
2/5 x 100 = 40% |
|
জন্ম পূর্বকালীন ও জন্মকালীন ক্ষেত্র |
|
|
|
2/5 x 100 =40% |
|
সামাজিক ক্ষেত্র |
|
|
|
|
|
শিক্ষাগত ক্ষেত্র |
|
|
|
4/5 x 100 = 80% |
|
অন্যান্য ক্ষেত্র |
|
|
|
Reporting:- এই প্রকল্পটি রূপায়ণ করতে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন নেতিবাচক দিক আমার চোখে পড়েছে। যেমন-
ক) বিদ্যালয়ে বিশেষ শিক্ষার্থীদের জন্য কোন বিশেষ পরিকাঠামো নেই।
খ) আর্থিক অসুবিধার জন্য বিশেষ শিক্ষা সহায়ক উপকরণ বিদ্যালয়ে আনা সম্ভব হয়নি।
গ) এই বিদ্যালয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকার অভাব রয়েছে।
ঘ) প্রশাসনিক বা সরকারি নিয়মনীতি বিদ্যালয়টিতে তেমনভাবে অনুসরণ করা হয় না।
ঙ) অভিভাবক অভিভাবিকাদের অশিক্ষার কারণে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা অনেকাংশই পিছিয়ে পড়েছে।
Conclusion:- বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (CWSN) শিশু সম্পর্কিত এই প্রয়োগিক কর্মটির বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমি অনেক তথ্য সঞ্চয় এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরেছি। যা ভবিষ্যতে ভীষণভাবে উপযোগী। বিদ্যালয় পরিবেশ ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের মনোভাব সম্পর্কে বিশেষভাবে অবগত হয়েছি। তাদের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে পেরেছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে কিভাবে মানুষ মানসিক বিকার-এর শিকার হচ্ছে এবং তার প্রতিকারের উপায় সম্পর্কেও জানা সম্ভব হয়েছে। বিদ্যালয়ে এই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের পালনীয় কর্তব্য ও ছাত্রছাত্রীদের কিভাবে সহযোগিতা করতে হয় এসব যাবতীয় তথ্য জানা গেছে। বর্তমানে আমি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে পারব এবং এই ধরনের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের মানসিক অক্ষমতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যে সমস্ত উপায় গুলি রয়েছে সেগুলিও প্রয়োগ করতে পারব। আর এই মানসিকতা যদি সকলের মধ্যে তৈরি হয় তবেই সমাজ বড় অভিশাপ থেকে মুক্ত হবে এবং এই ধরনের শিশুরা আবার সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসতে পারবে। এই ধরনের অত্যন্ত উপযোগী একটি বিষয়কে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় তথা মহাবিদ্যালয়কে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

.jpeg)
.jpeg)
0 Comments: