
B.S.A.E.U, B.Ed, Semester-I, Course-IV, নোয়াম চমস্কির মনস্তত্বপ্রধান ভাষাতত্ব (Language theory (Mentalistic) of Noam Chomsky)
শিক্ষাজীবন- চমস্কির শিক্ষাদীক্ষা
প্রধানত আমেরিকাতেই। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার পর ১৯৪৫ সালে পেনসিলভানিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। এখান থেকেই ১৯৪৯ সালে স্নাতক, ১৯৫১ সালে
স্নাতকোত্তর এবং ১৯৫৫ সালে Ph.D ডিগ্রী লাভ করেন।
কর্মজীবন- ১৯৫৫ সালে চমস্কি ম্যাসাচুসেটস্ ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে (MIT) আধুনিক ভাষা ও ভাষাবিজ্ঞানে ফেরারি পি. ওয়ার্ড পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং
দীর্ঘদিন যাবৎ এখানে কাজ করছেন। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং অধ্যাপক রূপে তিনি
কাজ করেছেন। ১৯৬৬ সালে Linguistic society America –র অধ্যাপক রূপে তিনি কাজ করেছিলেন। এছাড়াও তিনি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকের পেশা
গ্রহণ করেছিলেন। ভাষাতত্ববিদ্ হলেও গণিত, মনোবিজ্ঞান, মনের দর্শন, রাজনীতি,
নীতিবিদ্যা ইত্যাদি বিষয়েও তাঁর সমান আগ্রহ ছিল।
বিশেষ প্রাপ্তি-
- ১৯৬০ এর দশকে আমেরিকার অনেক সংবাদপত্র তাঁকে শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবির শিরোপা দিয়েছিল।
- ১৯৬৬ সালে তিনি আমেরিকার Linguistic society-র অধ্যাপক রূপে কাজ করেছেন।
- ১৯৯৫-২০০০ বিভিন্ন রাজনৈতিক কার্যাবলীর উপর বক্তব্য রাখেন।
- ২০১১ সালে চমস্কি The ‘David Memorial Lecture on Academic Freedom’ পুরস্কার পান।
এছাড়া চমস্কিকে বিংশ শতাব্দীর তাত্বিক ভাষাবিজ্ঞানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব ‘সৃষ্টিশীল ব্যাকরণের জনক’ হিসেবে গণ্য করা হয়।
রচনা- ভাষাবিদ চমস্কি আজ পর্যন্ত প্রায় ১০০ টিরও
বেশি বই লিখেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ হল-
1)
Syntactic Structure (1957)
2)
Current Issues in
Linguistic Theory (1964)
3)
Language and mind
(1968)
4)
On the Power and
Ideology (1987)
5) On Nature and Language (2001)
6) On Nature and Language (2001) ইত্যাদি।
চমস্কির ভাষা বিকাশের তত্ত্ব (Chomsky’s Theory of Language development)
i. i) Transformational Generative
Grammar:- এটি হল সৃজনমূলক ব্যাকরণের তত্ত্ব। ভাষা কোন যান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়, এটি একটি
সৃজনমূলক ব্যাপার যা মানুষের সৃজনী চেতনার (Creative
consciousness) সঙ্গে যুক্ত। চমস্কির মতে মাতৃভাষাভাষী মানুষের মন ভাষার মূল নীতিটুকু নিজের
সহজ বোধ ও বোধির সাহায্যে আয়ত্ত করে থাকে; তারপর সেই মূল নীতিটুকু প্রয়োগ করে
ভাষার সীমাবদ্ধ উপকরণকে নিজের সৃজনী ক্ষমতা দিয়ে নিত্য-নতুন পরিস্থিতির প্রয়োজনে
নতুন নতুন বাক্য সৃজন করে চলে।
iii. iii) Language Faculty:- মানুষের স্বাভাবিকভাবে ভাষা অর্জনের সহজাত ক্ষমতাকে চমস্কি Language Faculty বলেছেন। তিনি মনে করেন যে কোন মানুষের এই Language Faculty অনেকগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বাধীন উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত।
iv. iv) Cognitive Psychology:- বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষ ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এবং ভাষা অর্জন করতে চেষ্টা করে। মানব আচরণের এই অংশটিকে চমস্কি Cognitive Psychology বলেছেন।
V) v) Chomsky’s research on Grammar:- এটি ব্যাকরণ সংক্রান্ত চমস্কির গবেষণা। চমস্কির মতে ভাষা যেমন সৃজনশীল প্রক্রিয়া, ব্যাকরণও তেমনি সৃজনশীল উদঘাটন। ব্যাকরণ আলোচনার ক্ষেত্রে তিনি দুটি তত্ত্বের প্রয়োগ দেখিয়েছেন-
A) বাক্যগঠন তত্ত্ব (Sentence formation theory)- চমস্কি তাঁর ব্যাকরণে বাক্য বিশ্লেষণের যে রীতি রচনা করেছেন, তাতে ধ্বনির সাথে অর্থের সম্পর্কটি পরিস্কার হয় এবং বাক্যের অস্পষ্টতা ধরা পড়ে।
‘মুঘল সম্রাট বাবর প্রথম পাণিপথের
যুদ্ধের নায়ক ছিলেন’।
বাক্যটির মধ্যে একাধিক অর্থ রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রথম শব্দটির সাথে বাক্যের কোন্ অংশের সবচেয়ে নিকট সম্পর্ক তা স্পষ্ট নয়। এখানে দেখা যাচ্ছে একটি বাক্যে শব্দগুলির ঘনিষ্ঠতার তারতম্য রয়েছে।
B)
বিশ্বজনীনতার তত্ত্ব (Universal
theory)- চমস্কির ব্যাকরণের গুরুত্বপূর্ণ
তত্ত্ব হল ভাষাগত বিশ্বজনীনতার তত্ত্ব। যদিও প্রত্যেক ভাষার একটা নিজস্ব বৈশিষ্ট্য
আছে, তার মূলধ্বনির সংখ্যা, ক্রিয়াপদ্ধতি এমন কি শব্দরূপ ধাতুরূপের বিধান এবং
বাক্যগঠনের রীতিও আলাদা তবুও সব ভাষার মধ্যে কিছু সাধারণ ধর্ম আছে এবং সব ভাষার
ব্যাকরণের মধ্যে কিছু মূলীভূত ঐক্য রয়েছে। মনুষ্য প্রকৃতির বৈচিত্রতা থাকলেও সব
জাতির ভাষা প্রক্রিয়ায় এবং ব্যাকরণে একটা মূলগত ঐক্য আছে। সুতরাং বলা যেতে পারে
একটি ভাষার বাক্যগঠনের বাহ্যরূপের সঙ্গে অন্য ভাষার বাক্যগঠনের পার্থক্য থাকলেও
তাদের গভীর স্তর পর্যবেক্ষণ করলে একটা আভ্যন্তরীণ ঐক্য ধরা পড়বে। এক্ষেত্রে দুটি ভাষার মধ্যে তুলনা
করলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। এখানে একই বাক্যকে ইংরাজি এবং বাংলা দুটি ভাষায়
বিশ্লেষণ করে দেখানো হল-
VI) Performative
Theory:- Performative বলতে এমন কোন বিশেষ উচ্চারণ বা ভাব বোঝায় যা নিজেই
কোন বার্তা বা অর্থ বহন করে। যেমন ‘আমি বাজারে যাচ্ছি’ –এই বাক্যের অর্থ বা ভাবটি সম্পূর্ণ প্রকাশিত নয়। কারণ বাক্যের উদ্দেশ্য এখানে
স্পষ্ট নয়। কিন্তু যদি বলা হয় ‘আমি বাজারে যাচ্ছি মাছ কিনতে’ তাহলে অর্থ বা ভাবটি সম্পূর্ণ হবে। সুতরাং কোন ক্রিয়া বা ভাব যখন কর্মের
বার্তা বহন করে তখন তাকে Performative verb বলা হয়।
স্যাসুরের ভাষাতত্ত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
0 Comments: