ভাষার বিবর্তনের কারণ (Reason for the revolution of Language)
INFO Breaking
Live
wb_sunny

Breaking News

ভাষার বিবর্তনের কারণ (Reason for the revolution of Language)

ভাষার বিবর্তনের কারণ (Reason for the revolution of Language)

    

    ভাষার উৎপত্তির কারণ বা উপায় সম্বন্ধে পন্ডিতরা এখনো একমত হতে পারেননি, কিন্তু একথা সকলেই এক বাক্যে মেনে নিয়েছেন যে ভাষা নিয়ত পরিবর্তনশীল বা বিবর্তনশীল। সুকুমার সেন তার 'ভাষার ইতিবৃত্ত' গ্রন্থে ভাষাকে নদীর সাথে তুলনা করেছেন। কারণ নদীর মতোই ভাষার গতি আছে এবং বারে বারেই ভাষা গতিপথ পরিবর্তন করে। 

    প্রাচীন কাল থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ভাষাবংশ পরিবর্তিত হতে হতে আধুনিক ভাষারূপ লাভ করেছে। ভাষাতাত্ত্বিকরা ভাষার বিবর্তনের বিভিন্ন কারণ নির্দেশ করেছেন। সেগুলির কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা হল-


১) একটি ভাষার সঙ্গে অন্য ভাষাগোষ্ঠীর সংস্পর্শ।


২) মানুষের নতুন নতুন ধ্যান ধারণার সৃষ্টি। 


৩) রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও ধর্মীয় পরিবর্তন। 


৪) কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি বা পরিবারের উত্থান। 


৫) ব্যক্তিভেদে উচ্চারণের তারতম্য। 


৬) নতুন অর্থবোধক শব্দ গঠন। 


৭) ব্যক্তিভেদের বাক্য গঠনের তারতম্য। 


৮) মানুষের শ্রবণ ক্ষমতা হ্রাস। 


৯) এক স্থান থেকে অপর স্থানের দূরত্ব ও যোগাযোগের অভাব। 


১০) সময় বা কাল অতিবাহিত হওয়া।


    পরিবর্তনের স্বাভাবিক গতি যে ভাষায় রুদ্ধ হয়ে গেছে সে ভাষা আর মৌখিক ভাষা রূপে ব্যবহৃত হয় না। যেমন সংস্কৃত ভাষা। তবে কোন ভাষার পরিবর্তনের গতি অতি ধীর, যেমন লিথুয়ানীয় ভাষা। আবার কোনো ভাষার এই গতি অতি দ্রুত, যেমন ইংরেজি ভাষা। মৌখিক ভাষারূপে ব্যবহৃত হলে ভাষার পরিবর্তন অনিবার্য। এইভাবেই ইন্দো -ইউরোপীয় ভাষার বিবর্তনের ফলে সংস্কৃত, আবেস্তিয়, প্রাচীন পারসিক, গ্রীক, লাতিন, জার্মানিক, কেল্টিক, তোখরীয়, হিট্টিক, বালতো-স্লাভিক, আর্মেনীয়, আলবেনীয় ইত্যাদি কত নতুন ভাষা দেখা দিল আবার সেগুলো কালে কালে লুপ্ত হল। এই বিবর্তনের ফলেই সংস্কৃত থেকে প্রাকৃত স্তর পেরিয়ে নব্য ভারতীয় আর্য ভাষায় বাংলা, উড়িয়া, অসমীয়া, হিন্দি, উর্দু, পাঞ্জাবী, কাশ্মীরি, নেপালি, মারাঠি ইত্যাদি ভাষার জন্ম হয়েছে। এমনভাবেই ল্যাটিন ভাষার বিবর্তনের ফলে জন্ম হয়েছে ফরাসি, পর্তুগিজ, স্পেনীয়, রোমানীয়, ইতালীয় ইত্যাদি ভাষার। সুতরাং এটা বুঝতে কোন অসুবিধা নেই যে ভাষার পরিবর্তন অনিবার্য। প্রতিটি ভাষার প্রতিটি স্তরে অর্থাৎ ধ্বনী, শব্দ, পদক্রম ও অর্থ সর্বত্রই সবসময় বহু রকম পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। 

    নিচের রেখাচিত্রটির মাধ্যমে ভাষার বিবর্তনের একটি উদাহরণ দেখানো হল-



    এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশের অন্তর্গত ইন্দো-ইরানিয় ভাষা বিবর্তনের নানা ধাপ পেরিয়ে বাংলা, অসমিয়া, উড়িয়া, ভোজপুরি প্রভৃতি ভাষার জন্ম দিয়েছে।



0 Comments: