ভাষা শিক্ষণ কৌশল হিসেবে আলোচনার তাৎপর্য
INFO Breaking
Live
wb_sunny

Breaking News

ভাষা শিক্ষণ কৌশল হিসেবে আলোচনার তাৎপর্য

ভাষা শিক্ষণ কৌশল হিসেবে আলোচনার তাৎপর্য

 


    বর্তমান শিক্ষণ-শিখন পদ্ধতিতে অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষে গতানুগতিক শিখন পদ্ধতির পরিবর্তে আধুনিক মনোবিজ্ঞানসম্মত শিখন পদ্ধতির প্রয়োগ প্রায় সর্বত্রই চোখে পড়ে। আলোচনা (Discussion) -এর মাধ্যমে বিভিন্ন সেমিনার উপস্থাপনা, বিতর্কসভা, বক্তৃতাসভার আয়োজন ইত্যাদি প্রক্রিয়াগুলির সাথে নিযুক্তিকরণের দ্বারা শিখন সম্ভব। আলোচনাকে শিখনের সহায়করূপে শ্রেণিকক্ষে প্রয়োগ শিক্ষার্থীদের অনেকখানি প্রভাবিত করেছে। বর্তমানে আমেরিকা, ইউরোপ সহ এশিয়ার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনাকে শিখনের সহায়ক রূপে প্রয়োগের প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে। তবে ভাষা শিক্ষণ কৌশল হিসেবে আলোচনার ভূমিকাকে সার্থক করে তুলতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয়কেই আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা আবশ্যক। 


ভাষা শিক্ষণ কৌশল হিসেবে আলোচনা-


    ভাষা বিকাশের বিভিন্ন কৌশলগুলির মধ্যে আলোচনা অন্যতম। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী একত্রে একযোগে সক্রিয় হয়ে শিক্ষণ-শিখন পরিবেশকে যথাযথ করতে আলোচনার গুরুত্ব অপরিসীম। আলোচনা শিক্ষণ শিখন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। ভাষা শিক্ষণের কৌশল হিসাবে আলোচনা নিম্নলিখিত ভূমিকা পালন করে-


১) শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায় ফলে তাদের শ্রবণ ও কথন দক্ষতার দ্রুত বিকাশ ঘটে। 

২) আলোচনার মাধ্যমে পাঠ পরিচালনার ফলে শিক্ষার্থীর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ চিন্তন ক্ষমতার বিকাশ ঘটে। 

৩) আলোচনায় অংশগ্রহণ করার ফলে শ্রেণীকক্ষে এক বিশেষ ধরনের সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এই সামাজিক পরিবেশ একদিকে যেমন বিষয়কেন্দ্রিক শিখনে সহায়তা করে অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের নানারকম সামাজিক গুণ বিকাশে সহায়তা করে। 

৪) আলোচনার মাধ্যমে বক্তব্য শ্রবণের ফলে শিক্ষার্থীদের শ্রবণ ও কথন দক্ষতার বিকাশ ঘটে। 

৫) শ্রেণিকক্ষ আলোচনায় শিক্ষকের শারীরিক ভঙ্গিমা ও বাচনভঙ্গি ভাষার অর্থের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় ফলে শিক্ষার্থীর ভাষা বিকাশের পথ সুগম হয়। 

৬) আলোচনার সময় শিক্ষার্থীদের অনেক ভুল ত্রুটি সংশোধিত হয় যেটি তাদের ভাষা বিকাশের সহায়ক। 

৭) শ্রেণিকক্ষে বিভিন্ন আকর্ষণীয় বিষয়বস্তু ও গল্প আলোচনার মাধ্যমে তাদের সুস্পষ্ট উচ্চারণের ভিত মজবুত হয়। 

৮) শিক্ষক মহাশয় শ্রেণিকক্ষে শিক্ষণ প্রদীপন (TLM) -এর সাহায্যে পাঠ্যবস্তু আলোচনা করলে তা শিক্ষার্থীদের পঠনে অধিক আগ্রহী ও মনোযোগী করে তোলে। 

৯) সুনির্দিষ্ট ও নিয়ন্ত্রিত আলোচনার মাধ্যমে যেকোন ব্যক্তি মার্জিত ও পরিশীলিত ভাষা ব্যবহারের অধিকারী হয়ে ওঠে। 

১০) বিতর্কমূলক আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাচনভঙ্গিমা ও ভাষা ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। 


    আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ভাষার বিকাশ কেবলমাত্র শ্রেণিকক্ষে যে হয় তা নয় শ্রেণিকক্ষের বাইরেও আলোচনাকে ভাষা শিক্ষণ কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আলোচনার সময় শ্রোতা ও বক্তার প্রশ্ন-উত্তর পর্বে শ্রবণ দক্ষতার বিকাশ ঘটে এছাড়া বক্তব্যের মাধ্যমে পঠন দক্ষতার বিকাশ ঘটে, আবার পাঠ্য বইয়ের নির্বাচিত অংশ পড়ার মধ্য দিয়ে পঠন দক্ষতায় পটুত্ব অর্জন করা যায়। সবশেষে আমরা একথা বলতে পারি যে আলোচনার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থী ভাষা ব্যবহারে যেমন স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে ওঠে তেমনি তাদের ভাষা শেখার কাঙ্খিত উদ্দেশ্যও পূরণ হয়। 

0 Comments: