google.com, pub-5145004260852618, DIRECT, f08c47fec0942fa0 সংস্কৃত ভাষা শিক্ষণের গুরুত্ব ( Importance of Sanskrit Language Teaching)
INFO Breaking
Live
wb_sunny

Breaking News

সংস্কৃত ভাষা শিক্ষণের গুরুত্ব ( Importance of Sanskrit Language Teaching)

সংস্কৃত ভাষা শিক্ষণের গুরুত্ব ( Importance of Sanskrit Language Teaching)


    ভারতবর্ষে অধুনা প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার আরম্ভ ঊনবিংশ শতকের প্রারম্ভে। সেই সময়ে ইংরেজি শিক্ষাকে অধিক প্রাধান্য দেওয়া হলেও সংস্কৃত ভাষা শিক্ষাস্তরে অন্তত মাধ্যমিক পর্যন্ত অবশ্যপাঠ্য ছিল। সুপ্রাচীন কাল থেকে অদ্যাবধি সংস্কৃত ভারতবাসীদের নানা কর্মে ও ধর্মে, ভাষা ও সাহিত্যে, ভাব ও ভাবনায়, ধ্যান ও ধারণায়, জীবনে ও মরণে অতুলনীয় প্রভাব এবং অসীম প্রতিপত্তি বিস্তার করে আসছে, ভবিষ্যতে আরও করবে। সংস্কৃত ভাষা প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও কৃষ্টির ধারক ও বাহক। এই সংস্কৃত ভাষাতেই আমরা প্রথম শুনতে পেয়েছি মানব ও মানবাত্মার সুমধুর কলকাকলি।


    সংস্কৃত ভাণ্ডারে যে রত্নরাজি রয়েছে তা অদ্যাপি অনস্বীকার্য। এই ভাষা ভারতীয় ভাষাসমূহের জননী। এই ভাষাতেই চতুর্বেদ, ইতিহাস, বিজ্ঞান, ভারতীয় দর্শনশাস্ত্র, পুরাণ, চিকিৎসাশাস্ত্র, কলাবিদ্যা ইত্যাদি আরও শত শত বিষয় রচিত হয়েছে। প্রাচীন ভারতের আইনশাস্ত্র সম্বন্ধে আমরা কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রকে দেখতে পাই যা পাণ্ডিত্যে, সূক্ষ্মতায় ও গভীরতায় অতুলনীয়। এছাড়াও আমরা দেখতে পাই বিদূরনীতিশতকম্ যা আমাদের প্রাচীন সভ্যতার সমাজকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই ভাষাতেই রচিত হয়েছে জ্যোতিষশাস্ত্র, বীজগণিত, জ্যামিতি, ভোজবিদ্যা, শরীরবিজ্ঞান, শবব্যবচ্ছেদ বিদ্যা, চিকিৎসাশাস্ত্র, রসায়নশাস্ত্র, সমাজনীতি, নীতিশাস্ত্র, ধনুর্বিদ্যা, ন্যায়নীতি, কামশাস্ত্র, অলংকার, ছন্দবিজ্ঞানাদির সমৃদ্ধ ভান্ডার।


    বৈদিক যুগের একটি মূল্যবান সম্পদ হল বৈদিক গণিত, যার সাহায্যে অতিদীর্ঘ বা কঠিন অঙ্ক ক্যালকুলেটারের সাহায্য ছাড়াই সমাধান করা সম্ভব হবে। বৈজ্ঞানিকদের মতে বর্তমান যুগের কম্পিউটার পাণিনির ‘অষ্টাধ্যায়ী’ থেকেই অনুসৃত। কম্পিউটার পাণিনির ভাষাকে এমনভাবে গ্রহণ করে যে অন্য ভাষাকে সেভাবে গ্রহণ করে না। পাণিনি ব্যাকরণে 'মাহেশ্বরসূত্র' বলে যে সূত্রটি পাওয়া যায়, চিকিৎসকদের মতে তা সঠিক পাঠের মাধ্যমে জিহ্বায় আড়ষ্টতা সহজে কাটানো সম্ভব হয়ে ওঠে। সংস্কৃত ভাষায় ৬৪টি কলাবিদ্যার উল্লেখ পাই। তাছাড়া নন্দিকেশ্বরের ‘অভিনয় দর্পণ’, শারদাতনয়ের ‘ভাবপ্রকাশ’, মার্তঙ্গদেবের সংগীত রত্নাকর পাঠ করলে বোঝা যায় নৃত্যচর্চা, সংগীতচর্চা বিষয়ে সনাতন ভারত কত এগিয়ে ছিল।


    সংস্কৃত ভাষায় রচিত অথর্ববেদ চিকিৎসাশাস্ত্রের আকর স্বরূপ। যার প্রমাণ আমরা চরকসংহিতা ও সুশ্রুতসংহিতার মধ্যে পেয়ে থাকি। বর্তমান চিকিৎসাশাস্ত্রের বহু পদ্ধতি অথর্ববেদ থেকেই আবিষ্কৃত হচ্ছে। বর্তমানে প্রচলিত যোগশাস্ত্র তাও সংস্কৃত ভাষাতেই রচিত।


    আমরা জানি সংস্কৃতই সমাজ ও সভ্যতার ধারক ও বাহক, হোক সেটা প্রাচীন, মধ্য বা নব্য। সংস্কৃত বিনা ভারতীয় সভ্যতার ইতিহাস জানা প্রায় অসম্ভব। তাই বলা হয়-


"अमृतं मधुरं सम्यक् संस्कृतम् हि ततोऽधिकम् ।

देवभोग्यंमिदं यस्माद् देवभाषेति कथ्यते ।।"

0 Comments: