
মোবাইল লার্নিং (M-Learning) হল এমন একটি শিক্ষণ প্রক্রিয়া যেখানে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ডিভাইস যেমন স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ ইত্যাদি ব্যবহার করে যে কোনও সময়, যে কোনও স্থানে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। এটি ই-লার্নিংয়ের একটি সম্প্রসারিত রূপ, যেখানে মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষা আরও সহজ, দ্রুত ও ব্যক্তিগতকৃত হয়ে ওঠে।
মোবাইল লার্নিং এর বৈশিষ্ট্যসমূহ:
1. স্বনির্ধারিত শিক্ষা (Self-paced Learning): শিক্ষার্থীরা তাদের নিজের গতিতে এবং সুবিধা অনুযায়ী শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
2. অবস্থান নিরপেক্ষতা (Location Independence): যে কোন স্থান থেকে মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ সম্ভব।
3. ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষা (Personalized Learning): শিক্ষার্থীর প্রয়োজন ও আগ্রহ অনুযায়ী কনটেন্ট বেছে নেওয়া যায়।
4. ইন্টারঅ্যাকটিভ শিক্ষা (Interactive Learning): মাল্টিমিডিয়া, ক্যুইজ, গেম এবং ভিডিওর মাধ্যমে শিক্ষাকে আকর্ষণীয় ও কার্যকর করা হয়।
5. সহজ ও দ্রুত তথ্য প্রবেশ (Easy and Instant Access to Information): শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কোনো তথ্য মুহূর্তে পেতে পারে।
6. সহযোগিতামূলক শিক্ষা (Collaborative Learning): চ্যাট, ফোরাম ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অন্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যায়।
7. খরচ-সাশ্রয়ী (Cost-Effective): প্রচলিত শিক্ষার তুলনায় এটি অনেক কম খরচে করা যায়।
8. অনলাইন ও অফলাইন উভয় সুবিধা (Online and Offline Mode): অনেক অ্যাপ ও কনটেন্ট অফলাইনে ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়।
9. চিরস্থায়ী শিক্ষা (Lifelong Learning): যেকোনো বয়সের মানুষ সহজেই মোবাইলের মাধ্যমে নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পারে।
10. প্রযুক্তিনির্ভরতা (Technology-based): এটি প্রযুক্তি নির্ভর একটি পদ্ধতি যেখানে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।
মোবাইল লার্নিং এর চারটি সুবিধা-
১. যে কোন সময় ও যে কোন স্থান থেকে শিক্ষা গ্রহণ: মোবাইল লার্নিং-এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সময় ও স্থান নির্ভরতা ছাড়াই পড়াশোনা করতে পারে। এটি শিখন প্রক্রিয়াকে আরও নমনীয় ও সুবিধাজনক করে তোলে। যেমন—বাসে বা ট্রেনে চলার সময়, অবসরে, কিংবা ঘরে বসেও পাঠ গ্রহণ সম্ভব।
২. ব্যক্তিকৃত ও স্বনির্ধারিত শিক্ষা: প্রতিটি শিক্ষার্থী তার নিজস্ব গতি ও প্রয়োজন অনুযায়ী মোবাইলের মাধ্যমে পড়তে পারে। যেসব বিষয় বুঝতে কষ্ট হয়, তা বারবার রিভিউ করা যায়, যা একটি শ্রেণিকক্ষে সম্ভব নয়।
৩. সহজলভ্যতা ও খরচ সাশ্রয়: মোবাইল ডিভাইস ও ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই শিক্ষা উপকরণ সহজে পাওয়া যায়। এতে আলাদা শ্রেণিকক্ষ, বই বা যাতায়াতের প্রয়োজন পড়ে না ফলে অর্থ এবং সময় দুটোই সাশ্রয় হয়।
৪. বহুমাধ্যমিক (Multimedia) শিক্ষার ব্যবহার:
মোবাইল লার্নিংয়ে অডিও, ভিডিও, অ্যানিমেশন, ই-গ্রাফিকস, ক্যুইজ ইত্যাদির সংযুক্তি শিক্ষাকে আরও আকর্ষণীয় ও কার্যকর করে তোলে। এতে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বাড়ে এবং শেখার আগ্রহ জাগে।
0 Comments: