
Construction of Time table of any two classes with justification.
Introduction: বিদ্যালয়ে শ্রেণী শিক্ষায় আমরা অনেক শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে পড়াই। বিভিন্ন বিষয়ে একই দিনে তাদের বিভিন্ন বিষয়ের অধ্যয়ন করতে হয়। প্রতিটি শ্রেণীর জন্য একটি করে নির্দিষ্ট পাঠক্রম থাকে। এই পাঠক্রমের নির্দিষ্ট বিষয়গুলি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পড়াতে হয়। বিদ্যালয়ে এখন শুধুমাত্র পুঁথিকেন্দ্রিক শিক্ষা দেওয়া হয় না, শ্রেণীতে এবং শ্রেণীর বাইরেও নানা ধরনের শিক্ষা শিক্ষার্থীদের দিতে হয়।
বিদ্যালয়কে সমাজজীবনের প্রতিচ্ছবি বলা হয়। তাই সমাজজীবনে যে নিয়ম-শৃঙ্খলার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয় সেই নিয়ম-শৃঙ্খলা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় জীবনে থাকা প্রয়োজন। বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য প্রতিটি কাজ সুশৃঙ্খলভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে এটাই আশা করা যায়। এই কাজ সুন্দরভাবে করার জন্য একটি পূর্ব পরিকল্পনা করা হয়। এই পূর্ব পরিকল্পনাই হল সময় তালিকা (Time table)। মানবদেহে হৃদপিণ্ড থেকে রক্তপ্রবাহ যেমন দেহের সমস্ত কোষকে সতেজ ও ক্রিয়াশীল রাখে ঠিক তেমনি সময় তালিকা দ্বারা পরিচালিত শিক্ষণ পদ্ধতি সমগ্র বিদ্যালয়ে শিক্ষণ-শিখন কার্যক্রমকে সহজ করে তোলে।
সময় তালিকাকে একটি দর্পণ বলা হয়। যেখানে একটি বিদ্যালয়ের সামগ্রিক শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ডটি ফুটে ওঠে। এখানে পাঠক্রম -এর সাথে সহ পাঠক্রমিক কাজও যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় তার দিকেও নজর রাখা হয়। এই সময় তালিকাই বিদ্যালয়ের কর্মসূচিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করে থাকে।
Conceptual Literature: সারাবছর ধরে বিদ্যালয়ে নানান কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনার জন্য যেমন একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হয়, তেমনি প্রত্যেক দিনের কাজগুলিকে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনার জন্য প্রয়োজন হয় একটি পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনার একটি রূপ হল সময় তালিকা বা Time table.
H.G Stead এই প্রসঙ্গে বলেছেন- "It is the time table that supplies the Framework within which the work of the school proceeds. It is the instrument through which the purpose of the school is to function."
সুতরাং বিদ্যালয়ের সময় তালিকা হল পঠন-পাঠন ও নির্দেশনা সংক্রান্ত কার্যাবলীর একটি নিয়মবদ্ধ পূর্ব পরিকল্পনা যা সামগ্রিকভাবে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ধরনের কাজের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। বিদ্যালয়ে কাজের সুবিধার্থে সাধারণত নিম্নলিখিত প্রকারের সময় তালিকা প্রস্তুত করা হয়। যথা-
সামগ্রিক সময় তালিকা- এই ধরনের সময় তালিকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমস্ত শিক্ষক এবং সমস্ত শ্রেণীর নির্দেশনামূলক কাজকর্মের নির্দেশ থাকে। অর্থাৎ সমস্ত শিক্ষকের কাজ একসঙ্গে দেখানো থাকে। সারা সপ্তাহের প্রতিটি দিনের প্রথম পিরিয়ড থেকে সর্বশেষ পিরিয়ড পর্যন্ত একটি সামগ্রিক কর্মসূচি হিসেবে উল্লেখ করা থাকে। এই ধরনের সময় তালিকায় কোন একজন শিক্ষক দিনের নির্দিষ্ট সময় বা পিরিয়ডে কোন্ শ্রেণীতে শিক্ষণ কার্য পরিচালনা করবেন তার নির্দেশ থাকে।
শ্রেণীভিত্তিক সময় তালিকা- কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রত্যেকটি শ্রেণী অথবা প্রতিটি শ্রেণীর অন্তর্গত প্রতিটি বিভাগের জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষণ-শিখন কর্মসূচির নির্দেশ থাকে এই ধরনের সময় তালিকায়। এই সময় তালিকাকে বলা হয় শ্রেণীভিত্তিক সময় তালিকা। প্রতিদিন কোন্ বিষয় একটি বিশেষ শ্রেণীতে অথবা একটি শ্রেণীর বিশেষ বিভাগে পড়ানো হবে তার নির্দিষ্ট কর্মসূচি সময় তালিকায় নির্দিষ্ট থাকবে। মূলতঃ শিক্ষার্থীদের জন্য এই ধরনের সময় তালিকা প্রস্তুত করা হয়।
শিক্ষক ভিত্তিক সময় তালিকা- শিক্ষকভিত্তিক সময় তালিকায় প্রতিষ্ঠানে সর্বমোট কতজন শিক্ষক আছেন তার ওপর ভিত্তি করে সমস্ত শিক্ষকের জন্য নির্দিষ্ট কর্মসূচির নির্দেশ থাকে এই সময় তালিকায়। সামগ্রিকভাবে সমস্ত শিক্ষকদের জন্য এটি প্রস্তুত করা হয়। এই সময় তালিকার বামদিকে নির্দিষ্ট স্থানে লিপিবদ্ধ থাকে শিক্ষকবৃন্দের নাম। ডানদিকে তাদের প্রত্যেকের শিক্ষণ-শিখন কর্মসূচির নির্দিষ্ট দায়িত্ব অর্পণ করা থাকে নির্দিষ্ট সময় বা পিরিয়ড ধরে।
সাময়িক সময় তালিকা- একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঘটনাক্রমে প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই অনুপস্থিতি ব্যক্তিগত, প্রতিষ্ঠানগত অথবা পরিস্থিতিগত যে কোন কারণেই হোক না কেন বিদ্যালয়কে তার জন্য অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্ত অনুপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য যাতে প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয় এবং সংশ্লিষ্ট শ্রেণীগুলির পঠন-পাঠনের কাজ ব্যাহত না হয় তার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে এই ধরনের সময় তালিকা প্রস্তুত করা হয়।
Objectives: যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন কার্যাবলী সম্পাদনের ক্ষেত্রে সময় তালিকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সময় তালিকায় উদ্দেশ্যগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল-
১) বিদ্যালয় পরিচালনার কাজে সহায়তা করা।
২) সময় ও শক্তির অপচয় রোধ করা।
৩) প্রতিটি বিষয়ের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করা।
৪) বিদ্যালয়ে সুষ্ঠু কার্যাবলী সম্পাদনকে নিশ্চিত করা।
৫) সকল শিক্ষককে সমান দায়িত্ব অর্পণ করা সম্ভব।
৬) নৈতিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটান।
৭) বিদ্যালয় পরিবেশের শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করা।
৮) মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গিকে সন্তোষজনক করে তোলা।
৯) শিক্ষকের কর্মপরিকল্পনায় মানসিক প্রশান্তি প্রদান করা।
১০) বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজে সহায়তা দান করা।
Guidelines for the activity: প্রথমে আমরা সকলে বিষয়টি ভাল করে বুঝে নিয়ে শিক্ষক মহাশয়ের নির্দেশমত টাইম টেবিল তৈরির সব নিয়ম মেনে এই কাজে অগ্রসর হয়েছি। এটি তৈরি করার জন্য লাইব্রেরীতে নানারকমের বইয়ের সাহায্য নিয়েছি। এছাড়াও শিক্ষক মহাশয় মহাশয়ারা তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে আমাদের এই কাজে সাহায্য করেছেন।
Execution:
-:নবম শ্রেণীর সময় তালিকা:-
-:দশম শ্রেণীর সময় তালিকা:-
Reporting:-
শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাতে ক্লান্তি না আসে সেদিকে লক্ষ্য রেখে সময় তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বিষয়ের কাঠিন্যমানের উপর গুরুত্ব দিয়ে সময় তালিকাটি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি ক্লাসের সময়সীমা যথাযথভাবে ঠিক করা হয়েছে এবং নমনীয়তা বজায় রাখা হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষককে ক্লাস সমহারে বন্টন করা হয়েছে। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সময় তালিকাটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
Conclusion:-
বিদ্যালয়ের সময় তালিকা প্রস্তুত করতে গিয়ে আমি লক্ষ্য করেছি যে শ্রেণীর অপেক্ষাকৃত কঠিন বিষয়গুলি যেমন- গণিত, বাংলা, ইংরেজি বিজ্ঞান ইত্যাদি সময় তালিকার প্রথম দিকে দেওয়া হয়েছে। আর তুলনামূলক সরল বিষয়গুলি টিফিন বিরতির পরে দেওয়া হয়েছে। যদিও সর্বক্ষেত্রে এই নীতি মেনে সময় তালিকা প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি। এর কারণ হিসেবে জানতে পেরেছি যে বিদ্যালয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের মন উৎসাহে পরিপূর্ণ থাকে তাই জটিল বিষয়গুলি সময় তালিকার প্রথম দিকে রাখা হয়।
এই বিষয়গুলি সম্পর্কে অবগত হওয়ার ফলে আমরা হাতে কলমে সময় তালিকা প্রস্তুতির অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। ভবিষ্যৎ জীবনে যখন আমি শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত হব তখন এই প্রাপ্ত অভিজ্ঞতাগুলি আমার চলার পথকে সুগম করে তুলবে।
0 Comments: