google.com, pub-5145004260852618, DIRECT, f08c47fec0942fa0 ভাষা শিক্ষণের আচরণমূলক ও প্রজ্ঞামূলক তত্ত্ব (Behaviourist & Cognitivist theory of Language Teaching)
INFO Breaking
Live
wb_sunny

Breaking News

ভাষা শিক্ষণের আচরণমূলক ও প্রজ্ঞামূলক তত্ত্ব (Behaviourist & Cognitivist theory of Language Teaching)

ভাষা শিক্ষণের আচরণমূলক ও প্রজ্ঞামূলক তত্ত্ব (Behaviourist & Cognitivist theory of Language Teaching)

 



আচরণমূলক তত্ত্ব (Behaviourist Theory):-


    মনোবৈজ্ঞানিক তত্ত্বগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা গ্রহণযোগ্য হল ব্যবহারবাদ বা আচরণবাদ। ব্যবহারবাদীদের আগমনের সাথে সাথে মনোবিজ্ঞানের সংজ্ঞাও বদলে যায়। ব্যবহারবাদীরাই প্রথম বলেন মনোবিজ্ঞান হল ব্যবহারের বা আচরণের বিজ্ঞান। অর্থাৎ মানব ও মানবেতর পশুদের ব্যবহারের অধ্যয়নকারী বিজ্ঞান হল মনোবিজ্ঞান। মনোবিজ্ঞানের ইতিহাসে J. B. Watson সর্বপ্রথম ব্যবহারবাদ বিষয়ে আলোচনা করেন এবং তিনিই হলেন এই তত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে ভাষাশিক্ষণের ক্ষেত্রেও এই তত্ত্বের প্রয়োগ করা হচ্ছে।


    Waltman-এর মতানুসারে মানব এবং মানবেতর প্রাণীদের শিখনের তত্ত্বই হল ব্যবহারবাদ বা আচরণবাদ যা বস্তুগত দৃশ্যমান ব্যবহারের উপরই আলোকপাত করে। একজন শিক্ষার্থী কোন কিছু শেখার সময় এই বিষয়ক উদ্দীপনায় কী প্রতিক্রিয়া দেয় তা পরিমাপ করা হয় এই তত্ত্বের দ্বারা। শিক্ষার্থীর প্রতিক্রিয়াকে পুনর্বলনের মাধ্যমে ইতিবাচকে বা নেতিবাচকে পরিবর্তিত করা যায়। যে কোন ভাষাশিক্ষণের ক্ষেত্রে আচরণবাদী তত্ত্ব যথেষ্ট প্রয়োজনীয়।


ব্যবহারবাদীদের মতানুযায়ী এই তত্ত্বের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে; যথা-

(i) আচরণবাদীদের মতানুযায়ী আচরণবাদের ক্ষেত্রে প্রেষণার মূল কারণটি ব্যক্তির বাহ্যিক ব্যবহারের উপর অধিক নির্ভরশীল। 


(ii) মানুষের দ্বৈত সত্তা যা আভ্যন্তরীণ ব্যবহার এবং প্রকাশিত ব্যবহারের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে।


(iii) মানুষের প্রতি কৃত বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন কেবল প্রত্যক্ষভাবে দৃশ্যমান পরিমাণের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা যায়।


(iv) নৈতিকভাবে মানুষের ব্যবহারের ব্যাখ্যা সরল কিন্তু প্রকৃত ক্ষেত্রে মানব ব্যবহার বেশ জটিল।


(v) একটি বিস্তৃত আচরণগত বিশ্লেষণের দ্বারাই মানুষের আচরণকে প্রভাবিত করা যেতে পারে।


    আচরণবাদের এই বৈশিষ্ট্যগুলি স্মরণে রেখে ভাষাশিক্ষণ অনুশীলন করানো যেতে পারে। ভাষা শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের ভাষা শিক্ষণের সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অবশ্যই স্মরণে রাখতে হবে-


ক) পর্যবেক্ষণযোগ্য এবং পরিমাপযোগ্য শিখনগত আচরণগুলিকে লিখতে হবে।


খ) পূর্বেই কাঙ্খিত আচরণগুলির উল্লেখ করতে হবে এবং যথাযথ মূল্যায়নের মাধ্যমে শিখন স্তর যাচাই করতে হবে। 


গ) শিক্ষার্থীর কাজের উপর গুরুত্ব দিতে হবে এবং প্রামাণিক প্রেক্ষাপটে অভ্যাস করতে হবে। 


ঘ) কাঙ্খিত দক্ষতা উৎপাদনের জন্য নির্দেশমূলক কৌশল প্রয়োগ করা উচিৎ।


প্রজ্ঞামূলক তত্ত্ব (Cognitivist Theory):-


    অনেক সময় আমাদের কেউ ডাকলে আমরা তা শুনতে পাই এবং তারপর উত্তর দিই। ঘটনাক্রমে, অবচেতনভাবে আমাদের মস্তিষ্কে বা চিন্তায় একটি প্রক্রিয়া ঘটে। এই প্রক্রিয়াটি হল প্রজ্ঞাবাদ বা প্রজ্ঞামূলক তত্ত্ব। Mergel-এর মতানুসারে আচরণের পশ্চাতে থাকা চিন্তনভিত্তিক একটি প্রক্রিয়া হল প্রজ্ঞাবাদ। প্রজ্ঞাবাদ শিশুর সচেতন চিন্তার উপর আলোকপাত করে।


    মনোবিজ্ঞানের তত্ত্বগুলির মধ্যে প্রজ্ঞাবাদ অতি প্রাচীন তত্ত্ব। 1950 সালের পর এই তত্ত্বের বিকাশ ঘটে। এই তত্ত্বের প্রভাব শুরু হয় 1970-এর পরবর্তীকালে। বর্তমান ভাষাশিক্ষণের ক্ষেত্রে এই তত্ত্বের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষ করে Jean Piaget-এর সংজ্ঞানাত্মক বা প্রজ্ঞামূলক তত্ত্ব ভাষা শিক্ষণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে।


    প্রজ্ঞাবাদ যে মনোগত নীতিগুলিকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে সেগুলি হল- 

  • সংবেদন (Sensation) 
  • প্রত্যক্ষণ (Perception)
  • মনোযোগ (Attention)
  • সঙ্কেতীকরণ (Encoding) 
  • স্মৃতি (Memory)


    প্রজ্ঞাবাদের এই নীতিগুলিকে ভিত্তি করে ভাষা শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষার্থীদের ভাষা শিক্ষণ অনুশীলন করাবেন।

0 Comments: